মধ্যপ্রাচ্যের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র বাহরাইন। পারস্য উপসাগরের পশ্চিম অংশের ৩৬টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত এ দেশ। বাহরাইনের পূর্বে কাতার ও পশ্চিমে সৌদি আরব। এ দেশের সবচেয়ে বড় দ্বীপটিও বাহরাইন নামেই পরিচিত এবং এতে দেশটির বৃহত্তম শহর ও রাজধানী মানামা অবস্থিত। আজ থেকে প্রায় ৫,০০০ বছর আগেও বাহরাইন একটি বাণিজ্য কেন্দ্র ছিলো। দেশটি সবসময়ই শক্তিশালী প্রতিবেশীদের অধীনস্থ ছিলো। তারপর ১৭শ শতকে এটি ইরানের দখলে আসে। ১৭৮৩ সালে মধ্য সৌদি আরবের আল-খলিফা পরিবার নিজেদেরকে বাহরাইনের শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে এবং তখন থেকে তারাই দেশটিকে শাসন করে আসছে…
বাহরাইন সম্পর্কে চমৎকার কিছু তথ্য নিয়ে আজকের এই প্রতিবেদন। পড়ুন বিস্তারিত…
বাহরাইন সম্পর্কিত যত অজানা তথ্য
১. বাহরাইনে পৃথিবীর একমাত্র দেশ, যেখানে উটের বার্গার পাওয়া যায় !
২. কিং ফাহাদ কজওয়ে নামক একটি ২৬ কিলোমিটার ব্রিজের মাধ্যমে দেশটি সরাসরি সৌদি আরবের সাথে সংযুক্ত।
৩. বাহরাইন হচ্ছে সৌদির লাস ভেগাস। মদ, অ্যালকোহল, জুয়ার জন্য সৌদিবাসীদের কাছে বাহরাইন পছন্দের জায়গা। সৌদি আরব থেকে লোকেরা এখানে এসে রাতভর মদপান করে এবং মদ্যপ হয়ে ফেরার পথে কজওয়ে ব্রিজে অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটায়। এ কারণে কিং ফাহাদ কজওয়ে ব্রিজটি ব্লাড বর্ডার নামে পরিচিত।
৪. কথিত আছে, বাহরাইনে “বাহরাইনি খাবার” এর কোনো হোটেল নেই। যদি বাহরাইনে গিয়ে আপনি অথেন্টিক বাহরাইনি খাবার খেতে চান, তাহলে অতিথি হয়ে কারো বাসায় যান।
৫. বাহরাইনে কারো বাসায় অতিথি হিসেবে গিয়ে খেতে বসলে প্লেটে কিছু খাবার অবশিষ্ট রাখতে হয়। এর দ্বারা আপ্যায়ককে সম্মান জানানো হয়। অর্থাৎ বুঝানো হয় যে, তারা তাদের অতিথিকে প্রয়োজনের অধিক খাবার দিতে সক্ষম হয়েছে।
৬. বাহরাইনে শিয়া মুসলিমদের সংখ্যা সুন্নী মুসলিমদের প্রায় দ্বিগুণ। তবে সুন্নীরা বাহরাইনের সরকার নিয়ন্ত্রণ করেন।
৭. পঞ্চম শতকে বাহরাইনে খ্রিষ্টানের সংখ্যাই ছিলো বেশি।
৮. ১৯৩০ সালে বাহরাইন পারস্য উপসাগরের প্রথম দেশ হিসেবে তেলভিত্তিক অর্থনীতি গঠন করে, কিন্তু ১৯৮০ সালের শুরুর দিকেই বাহরাইনের সমস্ত তেল ফুরিয়ে যায়।
৯. বাহরাইনের মরুভূমিতে Tree of Life নামে একটি মেসকুইট গাছ রয়েছে, যার বয়স প্রায় ৪০০ বছর ! পানিবিহীন শুকনো বালুর মাঠে এই একটিমাত্র গাছ কিভাবে এত শত বছর যাবৎ আজো টিকে আছে, তা সবার অজানা।
১০. বাহরাইনের ৯৫% সৈকতগুলো ব্যক্তিমালিকানা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। দেশটির মাত্র ৫% সী বিচ সকলের জন্য উন্মুক্ত।
বাহরাইনের খাবারদাবার অনেকটা আমাদের বাংলাদেশ, ভারত কিংবা পাকিস্তানের মতই। মাছ মাংস বিরিয়ানী খিচুড়ি ফালাফেল এগুলোই মূলত বাহরাইনের নিজস্ব খাবার। এর বাইরে তারা খুব একটা অন্যান্য খাবারে অভ্যস্ত নয়। উটের বার্গার ব্যতীত বাহরাইনে আর কোনো এক্সোটিক ফুড বা অদ্ভুত খাবার নেই !