সৃজিত মুখার্জি এখন বাংলাদেশের জামাই। যদিও তিনি একজন ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক, অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার, অর্থনীতিবিদ। ১৯৭৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা সমরেশ মুখোপাধ্যায় একজন স্থাপত্যবিদ্যার অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, শিক্ষক, চিত্রশিল্পী। তার মা এনটমি বিভাগের একজন শিক্ষক।
তবে সৃজিতের সাথে বাংলাদেশের ছিলো নাড়িরটান, তার দাদা-ঠাকুরমাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা বাংলাদেশের মাটিতে। তবে সেই নাড়িরটান এখন মিলে গেছে নারীর টানে- সৃজিতের ভাষায়।
তবে সৃজিত প্রেমে মজেছেন বহুবার।
সৃজিত মুখার্জি ২০১৩ সালে ‘মিশর রহস্য’ ও ২০১৪ সালে ‘জাতিস্মর’ সিনেমা নির্মাণ করেন। এতে অভিনয় করেন টলিউডের সমালোচিত অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি। সিনেমা নির্মাণ করতে গিয়ে এই অভিনেত্রীর প্রেমে পড়েন সৃজিত। তখন পরমব্রত চ্যাটার্জির সঙ্গে মাত্র প্রেমের সম্পর্কের বিচ্ছেদ হয়েছে এই নায়িকার। এমন বিরহের দিনে প্রেমের পেয়ালা হাতে স্বস্তিকার পানে এগিয়ে যান সৃজিত মুখার্জি। যদিও তাতে দুজনের কেউই স্বস্তি পাননি। কারণ এই প্রেম বেশিদিন টেকেনি। গত বছর স্বস্তিকাকে নিয়ে সৃজিত নির্মাণ করেন ‘শাহজাহান রেজেন্সি’। সেসময় প্রাক্তন প্রেমিকার সঙ্গে সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। এ নিয়ে ঢের সমালোচনার মুখে পড়েন তারা।
২০১৫ সালে ‘রাজকাহিনী’ সিনেমা নির্মাণ করেন সৃজিত। প্রথমবার এই নির্মাতার সঙ্গে কাজ করেন বাংলাদেশের দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। হঠাৎ গুঞ্জন ওঠে পরিচালক সৃজিত মুখার্জির সঙ্গে প্রেম করছেন জয়া। যদিও এমন গুঞ্জন নাকচ করে দেন জয়া। বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো বিরক্ত হয়েছিলেন এই অভিনেত্রী।
গত বছরের শুরুতে ফের গুঞ্জন ওঠে ভারতের সংগীতশিল্পী মধুবন্তী বাগচীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে সৃজিতের। ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ এই প্রেমের খবর প্রকাশ করে। পরবর্তীতে বিষয়টি অস্বীকার করে মধুবন্তী বাগচী বলেন, ‘‘প্রত্যেকেই একের পর এক ‘তথাকথিত সম্পর্ক’ নিয়ে কথা বলাটা পছন্দ করেন না। আমি আমার জীবন এবং কাজকে খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকি, অযথা আমাকে নিয়ে গুঞ্জন রটাবেন না।’’
সৃজিত মুখার্জি পরিচালিত ‘এক যে ছিল রাজা’, সিনেমায় অভিনয় করেন অভিনেত্রী সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় শোনা যায়- এই পরিচালকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন সায়ন্তনী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এই জুটির একটি স্থিরচিত্রকে কেন্দ্র করে আলোচনা জমে ওঠে। যদিও সর্বশেষ তা গুঞ্জন পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে।
গত বছরের শেষের দিকে বলিউডে ‘হ্যাশট্যাগ মি টু’ অন্দোলনে সরগরম ছিল। এ হাওয়া টলিউডেও লেগেছে। অভিযুক্ত ছিলেন পরিচালক সৃজিত মুখার্জি। শর্মিষ্ঠা সাহা নামে এক নারী সৃজিত মুখার্জির বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগ তুলেন। ওই বছরের ডিসেম্বরে ‘রাজকাহিনী’ সিনেমায় অ্যাসিস্ট করার জন্য তাকে যোগ দিতে বলেন সৃজিত। শর্মিষ্ঠা তখন জার্মানিতে ছিলেন। হোয়াটস অ্যাপেই কথা হতো দুজনের। সৃজিতের অনুরোধে স্কাইপিতে কথা বলেছেন তারা। সৃজিত তাকে বারবার নিজের একাকীত্বের কথা বলতেন। কথোপকথনে সৃজিত বারবার শর্মিষ্ঠার চোখ, ঠোঁট ইত্যাদি নিয়ে মন্তব্য করতেন বলে জানান তিনি। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেন সৃজিত মুখার্জি।
অন্যদিকে সৃজিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন মডেল-অভিনেত্রী র্যাচেল হোয়াইট। নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, সৃজিতের সঙ্গে তিনবার দেখা হয়েছিল। প্রত্যেকবারই সৃজিতের প্রথম প্রশ্ন ছিল ‘আর ইউ সিঙ্গেল?’ এছাড়া আরো বেশ কিছু অভিযোগ তুলেছেন এই অভিনেত্রী। তবে র্যাচেলের অভিযোগ বরাবরের মতোই উড়িয়ে দিয়েছেন সৃজিত।
৪২ বছর বয়সি সৃজিত সংসারে থিতু হতে চেয়েছিলেন। ঘরও বেঁধেছিলেন। কিন্তু সে ঘর বেশিদিন টেকেনি। ২০১০ সালে ‘অটোগ্রাফ’ সিনেমা নির্মাণের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।
অবশেষে সৃজিত মুখার্জি তার দীর্ঘদিনের ব্যাচেলর ট্যাগ থেকে মুক্তি পেলেন। বাংলাদেশী মেয়ে মিথিলাকে বিয়ে করে থিতু হলেন ঘর-সংসারে।