মানুষ মারা গেলে তাকে মাটির নিচে রেখে আসা হয়। মাটির নিচে শুধু কবরই থাকে, ছোটবেলা থেকে এমনটা শুনে শুনেই বড় হয়েছি। তবে মাটির নিচে কিন্তু শুধু কবরই নয়, আরো অনেক কিছু রয়েছে ! প্রতিনিয়তই বিজ্ঞানী ও গবেষকরা বিভিন্ন গ্রহের উপর রিসার্চ করছেন। পত্রপত্রিকায় পাঠকরা সেসব দেখছেন। কিন্তু আমাদের এই পৃথিবীর মাটির নিচে কি কি রয়েছে, সে সম্পর্কে অনেকাংশে তেমন ধারণাই কারো নেই। বিজ্ঞানীরা শুধু এতটুকু ধারণা দিতে পেরেছেন যে, মাটির নিচে মেটাল ক্র্যাষ্ট আর কোর এর আলাদা আলাদা লেয়ার রয়েছে।
মানুষ মাটির নিচে একদম গভীরে যাওয়ার চেষ্টাও চালিয়েছে। পুরোপুরিভাবে সেটি সফল হওয়া সম্ভব নয়। তাই মাটির নিচে গিয়েও তারে পদচারণার চিহ্ন রেখে এসেছে মানবজাতি ! সেসব নিয়েই চলুন জেনে নেয়া যাক…
মাটির নিচে মানুষের আবিষ্কার ও পদচারণার চিহ্ন
- মাটির ১৩ ফুট নিচে রয়েছে তুতেনখামেন এর সমাধি। আর্কিওলজিষ্ট হাওয়ার্ড কার্টার ১৯২২ সালে এটি আবিষ্কার করেছিলেন।
- মাটির ২৬ ফিট নিচে রয়েছে কুমির দ্বারা তৈরি গর্ত, এই গর্তটি ৪০ ফুট গভীর। কোনো জীবজন্তুর দ্বারা তৈরি এটাই সবচেয়ে গভীর গর্ত
- ৬০ ফিট নিচে রয়েছে চায়নার বেইজিং এর একটি শহর। নিউক্লিয়ার যুদ্ধ থেকে বাঁচার জন্য এই শহরটি তৈরি করা হয়েছিল।
- ৬০ ফুটেরও বেশি নিচে প্যারিস শহরে রয়েছে এক কবরস্থান, যেখানে ৬০ লাখেরও বেশি মানুষের সমাধি রয়েছে। জায়গাটি ১৮০০ শতাব্দীতে আবিষ্কার করা হয়।
- ১১০ ফুট নিচে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর ফার্ম। এই ফার্মটি সম্পুর্ন স্টিলের সেল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে।
- ১৩১ ফিট নিচে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে গভীরে অবস্থিত সুইমিং পুল। এই সুইমিংপুলকে (দ্যা ডিপ জয়) বলা হয়। এটি ইতালিতে অবস্থিত।
- ইউক্রেনে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর মেট্রো ষ্টেশন। যা মাটি থেকে ৩৪৬ ফুট নিচে।
- সুইডেনে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর হোটেল রুম, যা মাটির ৫০৮ ফুট নিচে।
- ৭৮৭ ফিট নিচে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে গভীরতম রেলওয়ে স্টেশন। এটি জাপানের ২টি আইল্যান্ডকে একসাথে মিলিত করে।
- মানুষের তৈরি সবচেয়ে বড় কুয়া (উ ডিংডাং), এটি ১৮৬২ সালে তৈরি করা হয়, যা মাটি থেকে ১২৮৬ ফিট গভীর।
- চীনে রয়েছে আন্ডারগ্রাউন্ড ল্যাবরেটরী, যা মাটি থেকে ৮২০২ ফিট নিচে অবস্থিত (বলা হয় চীন প্রতিদিন মাটির নিচের এমন এমন সব জিনিস নিয়ে গবেষণা করে, যা সম্পর্কে বাকি দেশগুলোর কোনো ধারণাই নেই)।
- দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি গোল্ডমাইনে নির্মান করা হয়েছিলো এমন একটি লিফট, যা মাটি থেকে ১০২০৩ ফিট নিচে।
- Z-৪৪ Chayvo এটি একটি তেল বা গ্যাস উত্তোলনের খনি। এটির গভীরতা ৪০৬০৪ ফিট। বলা যায় এর মধ্যে ১৫টি বুর্জ খলিফা একের পর এক সাজানো যাবে।
- কোলা সুপার ডিপ হেলি নামে একটি গভীর জায়গা মানুষ খুঁড়ে ফেলেছিলো, যা কিনা ৪০২৩০ ফুট গভীর। এর ভেতরকার তাপমাত্রা ১৮০ ডিগ্রী পর্যন্ত চলে যাওয়ায় এটি খননের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পৃথিবীর গভীরতা ৬৩৭১ কিলোমিটার। এর মধ্যে মানুষ ১২.৩৮ কিলোমিটার পৌঁছাতে পেরেছে। বলা যায়, একদিন মানুষ ঠিকই পৃথিবীর নিচ পযন্ত পৌঁছাতে পারবে। কারণ আজ মানুষ যা করছে, ২০০ বছর পূর্বের মানুষজন তা চিন্তাও করতে পারেনি !