পৃথিবীর বিখ্যাত সব জাদুঘরগুলোর প্রধান আকর্ষণবিন্দু থাকে তাদের সংরক্ষিত বিখ্যাত চিত্রকরদের হাতে আঁকা ছবি, প্রাচীন মানুষ সহ অন্যান্য প্রানীদের কঙ্কাল, পুরনো আমলের অস্ত্র কিংবা ভাস্কর্য। প্রাচীন ভাস্কর্যের মধ্যে আবার বেশিরভাগই থাকে নগ্ন। খেয়াল করলে দেখবেন, ওসব ভাস্কর্যের সবারই পুরুষাঙ্গের আকৃতি থাকে বেশ ক্ষুদ্র। বিশালবপু এবং বলশালী শরীরের সাথে কেন ওরকম অসামঞ্জস্যপূর্ণ ছোট পুরুষাঙ্গ জুড়ে দেয়া হয়, তার কারণ জানবো এই পোস্টে।
প্রাচীন মূর্তিগুলোর পুরুষাঙ্গ ছোট ছিলো কেনো?
ভাস্কর্যগুলো সাধারনত প্রাচীন রাজা-মহারাজা, যোদ্ধা কিংবা বিভিন্ন ধর্মের ঈশ্বরের আদলে তৈরী করা হয়েছিলো। এক্ষেত্রে বিশেষ করে গ্রিক মাইথোলজির দেবতাদের কথা উল্লেখ করতে হয়।
বর্তমান সমাজে পুরুষাঙ্গের আকৃতি নিয়ে প্রায় সব ছেলেরাই কিছুটা হীনমন্যতায় ভুগে। সবারই গোপন ধারনা যে পুরুষত্বের প্রমান হচ্ছে তার পুরুষাঙ্গের আকৃতি। প্রাচীন গ্রিকদের ধারনা কিন্তু সম্পূর্ন বিপরীতমুখী ছিলো। তখনকার মানুষের ধারনা ছিলো একজন যোগ্য এবং আকর্ষণীয় পুরুষ সে-ই, যার রয়েছে বলশালী বাহু, ফর্সা চামড়া, চওড়া কাঁধ, চাপা নিতম্ব, ক্ষুদ্রাকার জিহ্বা এবং ক্ষুদ্র পুরুষাঙ্গ।
এরকম ধারনার কারণ হিসেবে জানা যায় যে, তৎকালীন সময়ে বৃহদাকার পুরুষাঙ্গের মালিকেরা প্রচন্ড যৌনক্ষুধাগ্রস্ত ছিলো। সময় সুযোগ পেলেই তারা বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ বাছবিচার না করেই নিজেদের যৌনকামনা পূরণ করত। স্বাভাবিক ভাবেই এই ধরনের পুরুষেরা ছিলো সমাজের চোখে নিকৃষ্ট। সুতরাং দেবতা জিউস একবার আইন করে পৃথিবীর সমস্ত বৃহদাকার পুরুষাঙ্গের মালিকদের ধ্বংস করে দিলেন। এই ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাননি স্বয়ং দেবতা প্রিয়াপাস-ও, যিনি ছিলেন যৌনতার দেবতা।
এই ঘটনার কারনেই পরবর্তীকালে যেসব গ্রিক ভাস্কর দেবতাদের মূর্তি তৈরী করতেন, তারা দেবতাদের চরিত্র অাকর্ষণীয় এবং পবিত্রতাপূর্ণ উপস্থাপন করার অর্থে পুরুষাঙ্গের আকৃতি ক্ষুদ্র রাখতেন। আর যেহেতু মূর্তি তৈরিকরণে গ্রিক ভাস্কররা ছিলো পথিকৃৎ, তাই পরবর্তীতে সমগ্র বিশ্বের ভাস্কররা গ্রিকদের এই রীতি মেনেই মূর্তি তৈরী করতো। বিখ্যাত ভাস্কর মাইকেল এ্যঞ্জেলো-ও এই নিয়মের বাইরে পা রাখেননি।