মাগি শব্দটি কোনো খারাপ শব্দ হিসেবে জন্ম নেয়নি। শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সহ তখনকার অনেক নামীদামী লেখকরাই এ শব্দটি তাদের সাহিত্যে ব্যবহার করতেন। শব্দটি রবীন্দ্রযুগ থেকে সাহিত্যে প্রায় অচলিত হয়ে যায়। রাজশেখর বসুর চলন্তিকায় শব্দটি অশিষ্ট, কিন্তু মাগী বানানে। যদিও শব্দটি তদ্ভব যেকোনো ব্যুৎপত্তির দিক থেকে, আর তাই ই-কার ব্যবহার করাটাই রীতি।
জ্ঞানেন্দ্রমোহনে আছে সংস্কৃত মাতৃগাম থেকে পালিতে মাতুগাম, সে থেকে প্রাকৃতে মাউগ্গাম, তা থেকে মাউগ, মাগু এবং মাগী (পুরনো বানানে)। রালফ লিলি টার্নারের ইন্দো-আর্য ভাষার তুলনামূলক অভিধানেও প্রায় একই ব্যুৎপত্তি। হরিচরণের মতে শব্দটি মাগ-এর সাথে ই যোগে নিষ্পন্ন, মাগ এসেছে মাউগ বা মাগু থেকে, মৈথিলিতে মৌগী বা মাগু দুইয়েরই অর্থ নারী। সুকুমার সেনের ব্যুৎপত্তি-সিদ্ধার্থে শব্দটি মার্গিতা থেকে, যার অর্থ মাগিবার জিনিস।
১৯৭৫ পূর্ববর্তী অসংখ্য বাংলা চলচ্চিত্রে মাগি শব্দটি আদুরে ডাক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে !
বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়েও কোনো কৃষক জমি থেকে ফিরে এসে উঠোনে বসে বউয়ের উদ্দেশ্যে হাঁক ছাড়তেন,আমার মাগি কোথায় রে?
বলাবাহুল্য, মাগি সম্বোধন তখন ছিলো অত্যন্ত আদরের। এখনো কিছু কিছু অঞ্চলে মাগি বলতে নারী, মহিলা বা স্ত্রী লিঙ্গদের বোঝানো হয়। তবে বেশিরভাগ মানুষই এখন এ শব্দটির দ্বারা পতিতা বা গণিকাদের বুঝেন। তবে গুগল ডিকশনারীর মতে, সেটা মাগি নয়, মাগী !
কালে কালে মাগি’র কী হাল হয়ে গেলো। এটা এখন একটা গালি…