পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সর্বাধিক ব্যবহৃত সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ফেসবুকের একজন ব্যবহারকারী হিসেবে ফেসবুক সম্পর্কে চমকপ্রদ কিছু তথ্য আপনার জানা থাকা উচিত। ২০০৪ সাল থেকে শুরু হওয়া এই ওয়েবসাইটটির ১৪ বছরের যাত্রাপথ কিন্তু খুব একটা সহজ ছিলো না। আপনার আমার মত সাধারণ লোকেরা খুব আশা নিয়ে একটি ওয়েবসাইট খোলে, ওয়েবসাইটটি হিট হবে নাকি মুখ থুবড়ে পরবে, তা আমাদের সবারই অজানা থেকে যায়। এমনই কিছু আশা, হতাশা, স্বপ্নভঙ্গ ও বিজয় নিয়ে আজকের এই ফেসবুক। ফেসবুকের পথচলার প্রতিটি পদে পদে স্থান করে নেয়া কিছু বিস্ময়কর ও চমকপ্রদ তথ্য নিয়েই আমাদের আজকের এই পোস্ট !
চলুন একনজরে জেনে যাক ফেসবুক সম্পর্কিত মজার কিছু তথ্য !
অভিনেতা আল পাচিনো ছিলেন ফেসবুকের প্রথম মুখ
২০০৪ সালে ফেসবুকের প্রথম যে লোগোটি বানানো হয়, সেখানে ফেসবুক লেখাটির নিচে এক ব্যক্তি কোডিং করা মুখের ছবি ব্যবহার করা হয়েছিলো। ওই ব্যক্তিটি ছিলেন বিখ্যাত অভিনেতা আল পাচিনো !
ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা জুকারবার্গের বন্ধু অ্যান্ডু ম্যাকলাম এই লোগোটি তৈরি করেন। উল্লেখ্য যে, তখনকার সময় গ্রাফিকস ডিজাইনের মান অতটা উন্নত ছিলো না। তাই তৎকালীন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই মানের ছবিটিকেই লোগো হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
পেপালের মালিক ছিলেন ফেসবুকের প্রথম ইনভেস্টর
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভার্চুয়াল ব্যাংক পেপাল এর মালিক পিটার থিয়েল ছিলেন ফেসবুকের প্রথম বড়মাপের ইনভেস্টর। ২০০৪ সালে হাতেগোণা শখানেক মানুষ ফেইসবুক চালাতো। খুব সম্ভবত এই ছোট্ট ওয়েবসাইটটি দেখেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন এটি একসময় বিশ্বের সেরা ওয়েবসাইট হতে যাচ্ছে। তাই তিনি তৎক্ষনাত ফেসবুকের পেছনে ৫ লাখ ডলার ইনভেস্ট করেন। পিটার থিয়েল ঠিকই অনুধাবন করেছিলেন। সত্যিই ফেসবুক বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও ব্যবসাসফল ওয়েবসাইট হয়ে গেলো !
ফেসবুক ডটকম আগে TheFacebook.com ছিলো !
শুরুর দিকে ফেসবুকের মূল ডোমেইনটি ছিলো thefacebook.com ! ২০০৫ সালে সিন পার্কার নামে এক ব্যক্তি facebook.com ডোমেইনটি কিনে আলাদাভাবে আরেকটি ওয়েবসাইট চালু করে তখন মার্ক জুকারবার্গদের টনক নড়ে। তারা তৎক্ষণাত ২লাখ ডলার দিয়ে সিন পার্কারের কাছ থেকে facebook.com ডোমেইনটি কিনে নেন। এবং নিজেদের ওয়েবসাইট সরিয়ে এই অ্যাড্রেসে নিয়ে আসেন !
মার্ক জুকারবার্গ লাল ও সবুজ রঙ দেখতে পান না
কখনো কি ভেবে দেখেছেন Facebook কেনো সবখানে নীল সাদা রঙ দুটি ব্যবহার করে? এর উত্তর হচ্ছে, মার্ক জুকারবার্গ একজন কালারব্লাইন্ড ! অর্থাৎ তিনি লাল ও সবুজ রঙ দেখতে পান না। এ তথ্যটি অনেকেরই জানা নেই। কালারব্লাইন্ড হবার কারণে জুকারবার্গ ফেসবুকের থিম ডিজাইন করার সময় লাল সবুজ বাদ দিয়ে প্রাইমারী কালার হিসেবে নীল রঙ ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে সাইটটি জনপ্রিয়তা পেয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন শুরু করলে অন্য ডিজাইনারের দ্বারা ফেসবুক নোটিফিকেশন প্যানেলে লাল রঙ যোগ করা হয়।
একদা লাইক বাটনটি ছিলো অ্যাওসাম বাটন
ফেসবুকের লাইক বাটনটি শুরুর দিকে Like নামে ছিলো না। ২০০৭ সালের পূর্বে এটি ছিলো Awesome বাটন। ২০০৭ সালে জুকারবার্গ অ্যাওসাম বাটনের নাম পরিবর্তন করে লাইক বাটনে রুপান্তর করেন।
ব্যবহারকারীদের ৩০০ পেটাবাইট ডাটা ফেসবুক জমা রাখে
১ পেটাবাইট মানে কত জানেন? ১ মিলিয়ন গিগাবাইট সমান ১ পেটাবাইট। ফেসবুক একজন ব্যবহারকারীর প্রায় ৩০০ পেটাবাইট ফাইল তাদের সার্ভারে জমা রাখার ক্ষমতা রাখে। ভাবা যায়? কত বিরাট ধারণ ক্ষমতা নিয়ে ফেসবুক তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে !! ফেসবুক চাইলে পুরো বিশ্বের জন্ম থেকে ধ্বংস পর্যন্ত সব তথ্য তাদের সার্ভারে জমা রাখার ক্ষমতা রাখে।
ফেসবুক সম্পর্কিত আরো কিছু অবাক করা তথ্য
- প্রতি সেকেন্ডে নতুন ৮ জন মানুষ ফেসবুকে এসে যুক্ত হয়।
- ২০১৫ সালে সারাবিশ্বের ইন্টারনেট জগতের প্রায় ২২% বিজ্ঞাপনের রেভিনিউ ফেসবুকের কোষাগারে গিয়ে জমা হয়। গত তিন বছরে যা কিনা এখন ৫০% -এ গিয়ে ঠেকেছে।
- ৬৮% মানুষ ফেইসবুক অ্যাপস ব্যবহার করেন। বাকিরা অপেরা মিনি, ইউসি ব্রাউজার, সাফারি ও ক্রোম সহ অন্যান্য ব্রাউজার ব্যবহার করে ফেসবুক চালান।
- চলমান ২০১৮ সালে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ ফেসবুকে ক্রেডিটকার্ড ব্যবহার করে নিজেদের পেজ বুস্ট/স্পন্সর করছেন।
- আমেরিকা ও কানাডার প্রতিটা ফেইসবুক ব্যবহারকারীর মাধ্যমে ফেইসবুক কোম্পানি প্রতিদিন সাড়ে ৫ ডলার আয় করে। তবে ভারত ও বাংলাদেশের প্রতিটা ব্যবহারকারীর মাধ্যমে ফেসবুকের প্রতিদিন ১ ডলার করে আয় হয় !
- সারাবিশ্বে ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি পোস্ট হয় বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা বাজে ! এবং শুধুমাত্র এই সময়ে পোস্ট করা স্ট্যাটাস, ফটো বা ভিডিওগুলোতেই সবচেয়ে বেশি লাইক পরে !
আরো পড়ুনঃ