২১তম বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা ও বরফাবৃত দেশ আইসল্যান্ড । খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিল আইসল্যান্ডের প্রায় ৩০,০০০ নাগরিক যা তাদের মোট জনসংখ্যার ১০%। পুরোটা সময় মাঠে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখলেও আর্জেন্টিনার ছিল প্রায় শুরু থেকেই একাধিক ভুল।
আর্জেন্টিনা বনাম আইসল্যান্ড
খেলা শুরুর প্রথম থেকেই আইসল্যান্ড ৪-১-৪-১ এ অফ দ্যা বল প্রেস করছিলো। যার ফলে সেন্ট্রাল পাসিং লাইন বলত গেলে টোটালি অফ ছিলো। তাই কোনো ওপেন প্লে থেকে চান্স ক্রিয়েট করতে পারেনি আর্জেন্টিনা। এছাড়াও একাদশ নির্বাচন থেকে শুরু করে মাঠেও ছিলো একাধিক ভুল।
কি ছিলো সেই ভুলগুলো?
ডিফেন্স
আর্জেন্টিনা টিমে ট্যাকনিক্যালি সবচে সলিড ডিফেন্ডার মুসাক্কিও। কিন্তু তাকে কম খেলার অজুহাতে নেয়া হয় নি। বিলিয়া, ডিফেন্সিভ্লি, রোহো এদের কাছে আইসল্যান্ড এটাকে এলেই মনে হয়েছে গোলের সম্বাবনা।ডি বক্সের ভেতর জটলা থেকে বিশ্বকাপে আইসল্যান্ডের হয়ে প্রথম গোলটি করেন ফিনবোগাসন।
ফ্রি কিক
হাফ টাইম পর্যন্ত অনেকগুলো ফ্রি কিক থেকে গোলের সুযোগ মিস করা ছিল আর্জেন্টিনার ভুলগুলোর একটি। ম্যাচের ৪ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে মেসির বাড়ানো বলে ওটামেন্ডি মাথা ছোয়ালেও গোলবারের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৮ মিনিটে আবারো ডি বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। মেসির নেওয়া ফ্রি কিকে তালিয়াফিকোর হেড একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
পাস থেকে গোল করায় ব্যর্থতা
ম্যাচের প্রথমার্ধে ম্যাশ্চেরানো যত সঠিক পাস দিয়েছে পুরো আইসল্যান্ড মিলেও তার সমপরিমান পাস দিতে ব্যার্থ। প্রথমার্ধ পর্যন্ত ৩৩৩ টা সফল পাস এবং ৯১% সফল ছিল কিন্তু সেগুলোকে একবারের বেশী গোলবার পর্যন্ত নিতে না পারাটাও ব্যার্থতা। দ্বীতিয়ার্ধের শেষেও ম্যাচের প্রায় ৭৩% বল দখলে ছিল আর্জেন্টিনার।কিন্তু বলার মত আর কিছুই করে দেখাতে পারেনি তারা।
আক্রমনভাগ
পুরো খেলায় পাসে সফল হলেও আইসল্যান্ডের ডিফেন্সে আক্রমনভাগে ব্যার্থ মেসিরা। মিনিটে মেসির নেওয়া দূরপাল্লার আচমকা শট আইসল্যান্ডের গোলরক্ষক রুখে দেন। ৩১ মিনিটে লুকাস বিলিয়ার নেওয়ার দূরপাল্লার শট গোলবারের সামান্য উপর দিয়ে চলে যায় যারফলে গোল হয়নি। ৮১ মিনিটে গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি কিন্তু ডি বক্সের বাইরে থেকে নেওয়ার দূরপাল্লার শটটি একটুর জন্য বাইরে চলে যায়। ম্যাচ শেষের অল্প আগে ৮৮ মিনিটে মাসেরানোর দূরপাল্লার দুর্বল তালুবন্দী করেন আইসলেন্ডের গোলরক্ষক হ্যালডারসন।
পেনাল্টি মিস
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেলেও সেখানেও ব্যার্থ আর্জেন্টিনা।৬৪ মিনিটে আইসল্যান্ডের ডি-বক্সে ডিফেন্ডার ম্যাগনুসনের ফাউলের শিকার হন আগুয়েরো। এতে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে গোল করতে ব্যর্থ হন মেসি। তার বাঁ পায়ের শটে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন আইসল্যান্ডের গোলরক্ষক হালডারসন।
হাজার কোটি সমর্থকের যেই মেসি এবং আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয়ের আশায় রাশিয়া এসেছিল সেই আর্জেন্টিনা টুর্নামেন্টের তুলনামূলক দূর্বল দল আইসল্যান্ডের কাছে ১-১ ড্রয়ে হোচট খায়। মূলত আর্জেন্টিনার দূর্বল ডিফেন্স এবং আইসল্যান্ডের শক্তিশালি ডিফেন্স এই ম্যাচের ফলাফল গড়ে দিয়েছে।
এখন দেখার বিষয় এত ভুল ও গড়পড়তা দল নিয়ে আর্জেন্টিনা কতদূর যেতে পারে!
আরো পড়ুনঃ