বাংলাদেশ প্রমিলা ক্রিকেট দল, মাত্র ৬০০ টাকা ম্যাচ ফি পাওয়া মেয়েদের এই দলের হাত ধরেই বাংলাদেশের প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের শিরোপা জয়ের গল্পটির জন্ম হলো।
১৯৭৭ সালের কথা, বিশ্ব প্রমিলা ক্রিকেটে অনুমোদন পায় নবীন এক প্রমিলা ক্রিকেট দল, বাংলাদেশ প্রমিলা ক্রিকেট টিম ! ১৯৭৭ সালে সহযোগী সদস্যের মর্যাদা পেলেও পূর্নাঙ্গ মর্যাদা পেতে অপেক্ষা করতে হয় ২০০০ সাল পর্যন্ত। বাংলাদেশ প্রমিলা ক্রিকেট টিম সর্বপ্রথম আনুষ্ঠানিক ম্যাচ খেলে ৬ জুলাই ২০০৭ সালে ব্যাংকক এ থাইল্যান্ডের সাথে।
ওডিআই স্ট্যাটাস
২৪ নভেম্বর, ২০১১ তারিখে মহিলাদের ক্রিকেট বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দলকে ৯ উইকেটে হারিয়ে একদিনের আন্তর্জাতিকের মর্যাদা লাভ করে বাংলাদেশ প্রমিলা ক্রিকেট টিম । এর ফলে প্রতিযোগিতায় শীর্ষ ছয়ে প্রবেশ করায় বৈশ্বিকভাবে ১০ম স্থানে প্রবেশ করে, যা একদিনের মর্যাদা প্রাপ্তির জন্য অত্যন্ত জরুরী ছিল।
সর্বশেষ এশিয়া কাপ
২০১৮ তে সর্বশেষ এশিয়া কাপে আন্ডারডগ হিসেবেই মাঠে নামে সালমা খাতুনের দল। টিমের ছিলনা কোন মানসম্মত প্র্যাকটিস সেন্টার। ওরা প্র্যাকটিস করতো সুলতানা কামাল মহিলা কমপ্লেক্সে যেটা মোটেও মানসম্মত নয়। এমনকি দলের একজনের ব্যাট চুরি হওয়ায় ন্যাশনাল টিমের তামিম ইকবাল নিজের ব্যাট দেন উপহার স্বরূপ। ছেলেদের ম্যাচ ফি যেখানে ১-৪ লক্ষ টাকা, সেখানে মেয়েদের সর্বোচ্চ ৫০০০ ! এমনকি লোকাল লিগের খেলায় ম্যাচ ফি ৬০০ টাকা ! যা অতিসম্প্রতি ১০০০ টাকায় উন্নিত করা হয়েছে। প্রমিলা টিমের কোন ক্রিকেটারেরই বেতন ৩০,০০০ টাকার বেশী নয়!। র্যাঙ্কিং এর তলানীতে থাকা টিম,বেতন ভাতায় সবার তলানীতে থাকা টিম, সুযোগ সুবিধায় তলানীতে থাকা টিম,টুর্নামেন্টের আন্ডারডগ টিম যখন প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার সাথে বাজেভাবে পরাজয়ের পর থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, ইন্ডিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে পৌছায় এবং ৩ উইকেটে ইন্ডিয়াকে পরাজিত করে, তখনও আমরা নাক সিটকাই। কারণ তারা মেয়ে। তাদের কোন ক্রেজ নেই, স্পন্সর নেই, রাস্তাঘাটে দেখলে সেলফি তুলতে ছুটে যাই না আমরা, কারণ তারা মেয়ে !
এত নিগ্রহ এত সমালোচনার পরেও তারা তাদের জবাবটা ব্যাটে বলেই দিয়েছে খুব ভালোভাবে। এই টাইগ্রেসরাই দিয়েছে আমাদের কোনো তিন জাতি টুর্নামেন্ট কিংবা তার উর্ধ্ব দেশের অংশগ্রহনে কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের শিরোপার স্বাদ। তাহলে হোক না হয়, আঠারো কোটি মানুষের গর্ব বাংলাদেশ প্রমিলা ক্রিকেট টিম …