বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ৪২০ বা ফোর টুয়েন্টির মর্মার্থ সম্ভবত প্রায় সবারই জানা আছে। আমাদের দেশে প্রতারণা, ঠকবাজি, বাটপারি কিংবা জালিয়াতি টাইপের অপরাধগুলোর বিচার করা হয় বাংলাদেশ পেনালকোডের ৪২০ ধারা অনুযায়ী। তাই এখানে প্রতারক-বাটপারদের ৪২০ বা ফোর টুয়েন্টি বলে অভিহিত করা একটা ট্রেন্ডে পরিনত হয়েছে…
ফোর টুয়েন্টি সম্পর্কিত বেশ কিছু জনশ্রুতি প্রচলিত আছে, যেগুলো সত্য নয়। যেমন আমেরিকার পেনালকোডে গাঁজা খাওয়া কিংবা বিক্রির বিচার করা হয় ৪২০ ধারা অনুযায়ী। অনেকের ধারনা গাঁজায় ৪২০ ধরনের রাসায়নিক যৌগ উপস্থিত রয়েছে। যদিও গাঁজায় রাসায়নিক যৌগের মোট সংখ্যা ৪৮৩।
এপ্রিল ২০, অর্থাৎ ৪/২০ হচ্ছে এ্যডলফ হিটলারের জন্ম তারিখ। যদিও এর সাথে প্রচলিত ৪২০ এর কোনো যোগসাজশ নেই। এগুলা শুধুমাত্র কিছু কাকতালীয় বিষয়। আসল ৪২০ এর উৎপত্তির সাথে এগুলোর কোনো মিল নেই।
এবার চলুন জেনে নেই ৪২০ এর উৎপত্তি এবং বিকাশ আসলে কোথায় এবং কিভাবে ঘটেছিলো !
History of 420
সময়টা ১৯৭১, ক্যালিফোর্নিয়া’র সান রাফায়েল হাই স্কুলের ৫ জন ছাত্রের একটা গ্রুপ ছিলো। তারা নিজেদের ‘দ্য ওয়াল্ডোস’ নামে পরিচয় দিত। কোনো এক অজ্ঞাত সূত্রে তারা জানতে পারলো, সমুদ্র উপকূলবর্তী পয়েন্ট রায়েসের কোনো এক জনমানবশূন্য এলাকায় কিছু গাঁজার গাছ রয়েছে। যেহেতু তারা গাঁজায় আসক্ত ছিলো, তাই তাদের কাছে ওই গাছগুলোর সন্ধান পাওয়া ছিলো খুবই আনন্দের ব্যাপার। তারা সিদ্ধান্ত নিলো, একদিন স্কুল ছুটির পর তারা ওই অঞ্চলে যাবে এবং সেখানে গাঁজার গাছগুলো সত্যিই আছে কিনা তা যাচাই করবে। সময় নির্ধারিত হলো বিকাল ৪ টা বেজে ২০ মিনিট। এই সময়ে তারা স্কুলের বাইরে একত্রিত হবে, এবং খানিকটা গাঁজা খেয়ে তারপর তাদের অভিযান শুরু করবে। নির্ধারিত দিনের আগের কয়েকদিন তারা একে অপরকে বিষয়টা মনে করিয়ে দেবার জন্যে “৪২০” কোডওয়ার্ডটা ব্যবহার করেছিলো। ব্যাপারটা হয়তো অনেকটা এরকম ছিলো, “তুমি নিশ্চয়ই ৪২০ এর কথা ভুলে যাওনি, তাই না?”
অভিযান শেষে যদিও তারা ওই অঞ্চলে কোনো গাঁজার গাছ পায়নি, তবুও পরবর্তীতে গাঁজা খাওয়ার প্রসঙ্গে তারা “৪২০” কোডওয়ার্ডটা ব্যাবহার করা অব্যাহত রাখে। একসময় সমগ্র স্কুলে ৪২০ এর রহস্য জানাজানি হয়, এবং সব ছাত্র-ছাত্রীরা এটা ব্যবহার করতে শুরু করে। আস্তে আস্তে স্কুলের বাইরেও এটা ছড়িয়ে যায়।
১৯৯০ সালে আমেরিকার ‘হাই টাইম’ নামক ম্যাগাজিন দ্য ওয়াল্ডোস -এর আবিষ্কৃত ৪২০ এর উপর একটা আর্টিকেল প্রকাশ করে। মূলত এই আর্টিকেলের মাধ্যমেই সমগ্র বিশ্বে পরিচিতি পায় ৪২০ বা ফোর টুয়েন্টি !
কি? হবে নাকি খানিকটা ৪২০? 😉