১২৩ প্রজাতির পাখির রাজ্য চট্টগ্রামের হাজারিখিল !

জায়গাটার নাম হাজারিখিল, বেশ সুন্দর একটা জায়গা। ঝিঝি পোকার ডাক সারাটা দিন মানুষকে মুগ্ধ করে রাখে। শব্দগুলোও একটু আলাদা। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির অন্তর্গত ‘হাজারিখিল অভয়ারণ্য’ এবং গিরিপথ, সুরঙ্গ ও পাহাড়ি ঝর্ণা ভ্রমণ, আর সাথে চারপাশে চা বাগান ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের সময়টা যেকোনো ভ্রমণপিপাসূদের জন্যই বেশ অ্যাডভেঞ্চারের হবে !

হাজারিখিল অভয়ারণ্য

নির্জন নিস্তব্ধ অচেনা এক অরণ্যে হাজারো নাম না জানা পাখির রাজত্বে হারিয়ে যেতে চান? তাহলে চোখ বন্ধ করে হাজারিখিল চলে যান। হাজারিখিল অভয়ারণ্য আপনাকে পাখির কলকাকলিমুখর আবেশময় এক জগতে নিয়ে যাবে।

২৯০৮ হেক্টর জমি নিয়ে এই বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যটি গঠিত। ১৮৯৩ সালে এ জায়গাটিকে ‘রামগড়-সীতাকুণ্ড সংরক্ষিত বন’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়।

বন্যপ্রাণীতে মুখর হাজারিখিলে দেখা মেলে নানান রকমের জীবজন্তুর। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ভাল্লুক, বন বিড়াল, মেছবাঘ, শিয়াল, মায়া হরিণ, সাম্বার, বন কুকুর, বন ছাগল, বানর ও হনুমান। আবার মাঝে মাঝে দেখা মেলে চিতাবাঘেরও ! মোট ৮ প্রজাতির উভচর এবং ২৫ প্রজাতির সরীসৃপ আছে এই বনে…

তবে পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে খ্যাত এই বনে রয়েছে প্রায় ১২৩ প্রজাতিরও বেশি পাখি ! সে হিসেবে হাজারিখিল অভয়ারণ্যকে পাখিপ্রেমীদের স্বর্গ বললেও ভুল হবেনা। বিশেষ করে বিপন্নপ্রায় কাঠময়ূর আর মথুরার দেখা পাওয়া যায় এখানে।

 

Hazarikhil Wildlife Sanctuary

পাখির রাজ্য হাজারিখিল

হাজারিখিলে পাওয়া সবচেয়ে দুর্লভ পাখির নাম –

  • হুদহুদ
  • চোখ গেল
  • নীলকান্ত
  • বেঘবৌ
  • আবাবিল

এ পাখিগুলো দেশের অন্য কোথাও দেখা যায় না।

এছাড়াও আরো আছে –

  • খুদে কাঠঠোকরা
  • বড় বসন্তবাউড়ি
  • ছোট বসন্তবাউড়ি
  • তিত মাছরাঙা
  • সাদা বুক মাছরাঙা
  • মেঘ হও মাছরাঙা
  • সবুজ সুইচোরা
  • খয়েরি মাথা সুইচোরা
  • নীল লেজ সুইচোরা
  • বড় কানাকুকা
  • বউ কথা কও
  • কোকিল
  • সবুজ কোকিল
  • সুরেলা কোকিল
  • তোতা
  • টিয়া
  • নাক কাটি
  • লক্ষ্মীপেঁচা
  • খুরলে পেঁচা
  • ডোরা কালি পেঁচা
  • কালো পেঁচা
  • জালালি কবুতর
  • তিলা ঘুঘু
  • রাম ঘুঘু
  • ধলা ঘুঘু
  • ছোট হরিয়াল
  • কমলা বুক হরিয়াল
  • হলুদ পা হরিয়াল
  • ডাহুক
  • বনমোরগ
  • জয়াড কাঠঠোকরা
  • বর্মি কাঠঠোকরা
  • সবুজ কাঠঠোকরা
  • সোনালি কাঠঠোকরা
  • মেটে টুপি কাঠঠোকরা
  • কুটুম পাখি
  • সবুজ হাঁড়িচাছা
  • ফিঙ্গে
  • কেশরাজ
  • ভীমরাজ
  • ছোট ফিঙে
  • হলদে পাখি
  • ফটিকজল
  • লাটোরা
  • আলতাপরী
  • লেজ নাচানি
  • বাদামি কসাই
  • বড় কাবাশি
  • চামচ কসাই
  • মেটে পিঠ কসাই
  • সিপাহী বুলবুল
  • কালো বুলবুল
  • ধূসর বুলবুল
  • কালো মাথা বুলবুল
  • শ্যামা
  • কালোঘর রাজন
  • দোয়েল
  • ফুটফুটি চটক
  • নীল শিলাদামা
  • শিলাদামা
  • লাল বুক চটক
  • মেটে মাথা ছোট চটক
  • জলপিপি
  • হট্টিটি
  • মেটে মাথা হট্টিটি
  • বেশরা
  • তিলা ঈগল
  • ভুবন চিল
  • শঙ্খ চিল
  • ছোট মাছ মুরাল
  • ছোট বাজ
  • পানকৌড়ি
  • গো-বক
  • সাদা বক
  • মাইজলা বক
  • কানি বক
  • ওয়াক
  • শামুক খোল
  • ধূসর বুক টুনি
  • সাধারণ বন টুনি
  • পাতা বুলবুল
  • সবুজ বুলবুল
  • তাত শালিক
  • ঝুঁটি শালিক
  • গোবরে শালিক
  • কাঠশালিক
  • পাতিকাক
  • দাঁড়কাক
  • নীলকান্তমণি চটক
  • এশীয় খয়েরি চটক
  • লেজ চেরা পাখি
  • টুনটুনি
  • সাত ভায়লা
  • সাদা মুকুট পাঙ্গা
  • পাঙ্গা
  • কালচে ফটক
  • ম্যাকারিন
  • বেগুনি বুক মৌটুসি
  • নীল টুনি
  • মৌচাটুনি
  • সিঁদুরে লাল মৌটুসি
  • বাধা টুনি
  • দাগি সাঁতারে
  • লাল ফুলঝুরি
  • তিত পাখি
  • চড়ুই পাখি
  • বাবুই
  • মাঠ চড়াই
  • তিলা মুনিয়া
  • বন খঞ্জন
  • সাদা খঞ্জন
  • ধূসর খঞ্জন
  • হলদে মাথা খঞ্জন

হাজারিখিলে নানান ধরণের বৃক্ষের সমাহারও উপভোগ করতে পারবেন। তবে চিরহরিৎ গাছই বেশি এখানে। এছাড়াও আছে গর্জন, চাপালিশ, সেগুন, কড়ই, মেহগনি ও চুন্দুল। বিখ্যাত রাঙ্গাপানি চা বাগান এ অভয়ারণ্যের পাশেই অবস্থিত।

যেভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে পারেন বাসে অথবা ট্রেনে। এরপর ফটিকছড়ি হয়ে হাজারিখিল যেতে হবে। ফটকছড়ি পর্যন্ত বাসে যেতে পারবেন। এরপর ফটিকছড়ি বাজার থেকে সিএনজি করে হাজারিখিল অভয়ারণ্যে গিয়ে গাইড সাথে করে প্রায় আড়াই ঘন্টা পাহাড়ের গিরিপথ ট্রেকিং করার পর পাওয়া যাবে ‘কালাপানির ঝর্ণা’। সেখান থেকে ফিরে এসে চা বাগান পেরিয়ে যেতে পারেন সুরঙ্গ দেখতে…

কোথায় থাকবেন

থাকার জন্য চট্টগ্রাম বা ফটিকছড়ি শহরে নানান মানের হোটেল আছে। অবশ্যই ভাড়া দরদাম করে রুম দেখে উঠবেন।

আর দেরী কেনো? ঘুরে আসুন পাখির স্বর্গ হাজারিখিল ! হারিয়ে যান পাখিদের সাথে চিরসবুজ অরণ্যের মাঝে…