পৃথিবীতে আমরা আরামসে হাঁটাচলা করছি, দৌড়ঝাঁপ করছি। কিন্তু যদি আমরা পৃথিবীর বাসিন্দা না হয়ে অন্য কোনো গ্রহের বাসিন্দা হতাম। তাহলে কেমন হত? ইতিমধ্যেই আমরা জেনে গেছি, সব গ্রহের গ্রাভিটি এবং ভূপৃষ্ঠ এক নয়। একেক গ্রহেরটা একেক রকম। তাহলে কেমন হবে সেসব গ্রহে দাঁড়াতে ! চলুন একে একে আমাদের সৌরজগতের সবগুলো গ্রহ সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক। এই পর্বে আমরা প্লানেট ভেনাস বা শুক্র গ্রহ নিয়ে কথা বলবো…
প্লানেট ভেনাস বা শুক্র গ্রহ
আমাদের সৌরজগতের ২য় গ্রহ হচ্ছে প্লানেট ভেনাস (Planet Venus) বা শুক্র গ্রহ ! এ গ্রহটি ২২৫ দিনে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে বা ঘুরে আসে। অর্থাৎ কেউ যদি এ গ্রহটিতে বাস করতে পারে, তাহলে তাদের ২২৫ দিনে এক বছর হত। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, ২২৫ দিনে একবছর হওয়া এই গ্রহটিতে ‘দিনের দৈর্ঘ্য’ বছরের চেয়ে বেশি। এ গ্রহে ১ দিন হতে হতে পৃথিবীর প্রায় ২৪৫ দিন পেরিয়ে যায় ! কারণ এর আবর্তন গতি খুব ধীর। সোজা কথায়, গ্রহটিতে বছরের চেয়ে দিন বড় !
প্লানেট ভেনাস বা শুক্র গ্রহের পৃষ্ঠে দাঁড়াতে কেমন লাগবে?
শুক্র গ্রহের তাপমাত্রা ৪৬৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই গ্রহটিতে প্রবেশ করলে আপনি মিনিটখানেকের মধ্যেই গলে পুড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন। সেই সাথে এর পৃষ্ঠে থাকা বিষাক্ত ৯৫% কার্বন ডাই অক্সাইড তো আছেই ! এই গ্রহটির বায়ুমন্ডল খুবই ভারী। অর্থাৎ এই গ্রহের পৃষ্ঠে দাঁড়িয়ে হাত নাড়ালে মনে হবে, আপনি সাগরে ডুব দিয়ে পানির নিচে দাঁড়িয়ে হাত নাড়াচ্ছেন বা নড়াচড়া করছেন ! এর ভুপৃষ্ঠে পৃথিবীর মত মাটি বা বালু নেই। বরং রয়েছে লাভার আস্তরণ। যার কারণে নাসার মহাকাশযান সেখানে অবতরণের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সেটি গলন্ত লাভায় ডুবে যায় !
ভেনাস বা শুক্র গ্রহটিতে দাঁড়িয়ে সেখানকার আকাশের দিকে তাকালে লালচে কমলা রঙয়ের আভা দেখা যাবে। পৃথিবীর আকাশ যেমন নীল, তেমনি শুক্রের আকাশ হচ্ছে লালচে কমলা বর্ণের। কার্বন ডাই অক্সাইডের কারণে সেখানে এতটাই মেঘ জমে যে, একটু পরপরই আকাশে বিদ্যুৎ চমকাতে দেখা যাবে এবং সালফিউরিক এসিড পূর্ণ বৃষ্টি পরতে দেখা যাবে। কিন্ত মজার ব্যাপার হচ্ছে, সেখানকার ভুপৃষ্ঠ এতটাই গরম যে, বৃষ্টির পানি আর নিচ পর্যন্ত আসবেনা, শূন্যেই থেমে যাবে !
এসব কারণেই প্রচন্ড উত্তপ্ত এই গ্রহটিতে আপাতত মানুষের পক্ষে বসবাস একবারেই অসম্ভব !
আরো পড়ুনঃ