বাইবেল এবং গ্রীক পুরাণ অনুযায়ী, আদমের প্রথম স্ত্রী এবং ঈশ্বরের সৃষ্টি প্রথম নারী ছিলেন ইভ নয়, লিলিথ। লিলিথকে নিয়ে অনেক রকমের প্রচলিত তথ্য আছে ইন্টারনেটে। উইকি ঘাটলেই পেয়ে যাবেন প্রমাণ সহ আরো অন্যান্য তথ্য। কিন্তু আসলেই কে ছিলেন এই লিলিথ, জেনে নেওয়া যাক সংক্ষেপে –
বাইবেল অনুযায়ী লিলিথ ছিলেন আদমের প্রথম স্ত্রী এবং ঈশ্বরের সৃষ্টি প্রথম নারী এবং শয়তানের প্রথম স্ত্রী। আদম এবং লিলিথকে একই মাটি থেকে বানানো হয়। শুধু তাই না, লিলিথ ছিলো আদমের সমতুল্য। আদমের মত করেই জ্ঞান-বুদ্ধি-চিন্তাশক্তি লিলিথকে প্রদান করা হয়।
লিলিথ নিজেই আদমকে ছেড়ে চলে আসেন। এর কারণ হিসাবে বলা হয়, যেহেতু তারা সমান সমান ছিলেন তাই একে অন্যকে একেবারেই সহ্য করতে পারছিলেন না। আর তাই লিলিথ আদমকে ছেড়ে আসলে, আদমের সহচারী হিসাবে পরবর্তীতে ইভ -কে বানানো হয়। এবং এইবার ইভের জন্য ঈশ্বর অন্য মাটি এবং বুদ্ধি-জ্ঞান কিছুটা পরিবর্তন আনেন।
লিলিথ আদমকে ছেড়ে চলে গেলেও ঈশ্বর লিলিথকে ফিরিয়ে আনার জন্য তিনজন ফেরেশতা পাঠান। তারা পৃথিবীতে মিশরের কাছে লিলিথকে দেখতে পান। যেখানে তিনি তাঁর কন্যাকে জন্ম দেবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ফেরেশতাদেরকে লিলিথ বলে দেন যে তিনি ফিরবেন না। এতে ঈশ্বর রেগে যান এবং চিরতরে লিলিথকে বহিষ্কার করেন।
লিলিথ পরবর্তীতে একটি গুহায় বাস করতে শুরু করেন, যেখানে আয়নার সাহায্যে তিনি আদম এবং ইভকে দেখতে পেতেন। লিলিথের কন্যা এই বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে গুহার অনেক ভিতরে গিয়ে আয়নাটি রেখে আসেন। সেখান থেকে শয়তান লিলিথকে দেখে তাঁর প্রেমে পরে এবং তাঁর সাথে যোগাযোগ করে। এরপর লিলিথ প্রায় শ’খানেক মেয়ে এবং ছেলে জন্ম দেন।
লিলিথের প্রতি ঈশ্বর এতটাই বিরূপ ছিলেন যে, তাকে এবং তাঁর সমস্ত সন্তানকে তিনি অভিশপ্ত করে দেন। লিলিথ কে নিয়ে আরো অনেক বর্ননা পাওয়া যায় –
“লিলিথ এর আরবী মানে হচ্ছে রাত। এবং তাকে রাতের পিশাচদের মধ্যে অন্যতম একজন বলে মনে করা হয়। লিলিথের যে সকল মুর্তি পাওয়া যায়, সেখানে তাকে পাখা এবং পেঁচার পা যুক্ত অবস্থায় দেখা যায়। ব্যাবেলীয়ন লেখাগুলোতে লিলিথকে উল্লেখ করা হয়েছে অশুভ আত্মা হিসেবে, যে কিনা ছোট ছোট বাচ্চাদের চুরি করে নিয়ে যায়।”
আধুনিক ইহুদিগণ লিলিথকে মর্ডান নারী হিসাবে গণ্য করেন, যে তাঁর স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, সংসার ত্যাগী এবং জরায়ু স্বাধীনতা স্থাপনকারী।
লিলিথকে নিয়ে মত বিরোধের কোনো শেষ নেই। তাকে শয়তান বলেন বা হাজার শয়তানের জন্মদাত্রী বলেন অথবা স্বাধীন নারীদের প্রতীক বলেন, লিলিথকে সুন্দরভাবে এক কথায় বলা যায় –
“Half of me is beautiful. But you were never sure which half.”
– Ruth Feldman, “Lilith”