বিভিন্ন সময় নৃ-বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর ধ্বংস হওয়া নিয়ে নানান ধরনের মতবাদ পোষন করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার অানুমানিক সময়ও নির্ধারন করার চেষ্টা করেছেন। আমাদের আজকের আর্টিকেল সেই সব বিজ্ঞানীদের দ্বারা নির্ধারিত পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার আনুমানিক সময়গুলো নিয়ে।
১. মার্চ ১৬, ২৮৮০: সৌরজগতে প্রত্যেকটা গ্রহ নক্ষত্র এমনকি একটা পাথরের কণাও নিজ নিজ কক্ষপথে ঘূর্নায়মান। বিগব্যাঙ -এর পর থেকে সৌরজগতের সবকিছু এভাবেই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। কিন্তু প্রায় আমরা শূন্যের উপর উল্কাপাত হতে দেখি। সৌরজগতের কোনো গ্রহ নক্ষত্র কিংবা পাথর বা অন্যকোন ধাতব খন্ড যখন নিজ কক্ষপথ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তখন তারা প্রচন্ড বেগে অন্য কোনো গ্রহ বা নক্ষত্রের আকর্ষণে তার দিকে ধাবিত হয় এবং হয়তো সংঘর্ষও ঘটে।
ঠিক এরকমই একটা পাথরের খন্ডের নাম “1950 DA” যা ধেয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে। নাসা’র বিজ্ঞানীদের মতে সেকেন্ডে ১৫ কি.মি. বেগে ধাবিত এই উল্কাটি ২৮৮০ সালের ১৬-ই মার্চ অতলান্তিক মহাসাগরে নিক্ষিপ্ত হবে, যা মুহূর্তের মাঝেই পৃথিবী ধ্বংসের জন্যে যথেষ্ট।
২. সন-২১০০: পৃথিবীতে প্রতিদিন ৩৬৭ হাজার শিশু জন্মগ্রহণ করছে। প্রচন্ড দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, আর অন্যদিকে পৃথিবীর প্রাকৃতিক সম্পদ ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ম্যাগাজিন সাস্টেইন এ্যবিলিটি’র ধারনা অনুযায়ী আগামী ৮৩ বছরের মধ্যেই পৃথিবীর সমস্ত প্রাকৃতিক সম্পদ শেষ হয়ে যাবে। অর্থাৎ মানবজাতি নির্মূল হবে পৃথিবী থেকে।
৩. সন-২০৬০: বিশ্বখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন ধারনা করেছিলেন পৃথিবী ধ্বংস হবে ২০৬০ সালে। সে বাইবেলের বিভিন্ন বানী’র উপর গবেষণা করে এই ধারনায় উপনিত হয়েছিলেন। সেখানে উল্লেখ ছিলো যে পৃথিবী ধ্বংস হবে রোমান সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা’র ১২৬০ বছর পরে। যেহেতু রোমান সাম্রাজ্যবাদ ৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো, তাই নিউটনের মতবাদ অনুযায়ী ধারনা করা যাচ্ছে যে ২০৬০ সালেই ধ্বংস হতে যাচ্ছে পৃথিবী।
৪. ফেব্রুয়ারি ৫, ২০৪০: নাসার বিজ্ঞানীদের হিসাবমতো সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০৪০ সালের ৫-ই ফেব্রুয়ারি “2011 AG5” নামক একটা উল্কাপিণ্ড আঘাত হানবে পৃথিবীতে। ১৪০ মিটার আয়তনের এই উল্কাপিণ্ড-ই বর্তমানে পৃথিবীর সবচে’ বড় হুমকি।
৫. সন-২০৩০: বিজ্ঞানী জেমস্ লাভকক -এর মতে ২০৩০ সালের পরপরই পৃথিবীর ৮০ শতাংশ মানুষ দারিদ্রতা আর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারনে মারা যাবে। গ্রীন হাউজ এ্যফেক্টের প্রভাবে ইওরোপ-আমেরিকা সহ বিভিন্ন উন্নত দেশগুলাও পরিনত হবে মরুভূমিতে। জীবন ধারনের জন্যে মৌলিক দ্রব্যগুলা থাকবে শুধু প্রচন্ড ধনী ব্যাক্তিদের আওতায়। আর বর্তমান পৃথিবীর স্থলভাগের প্রায় ৬০ শতাংশ চলে যাবে সমুদ্রগভীরে।
ব্যাক্তিগতভাবে এই মতবাদ আমার কাছে হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই মনে হচ্ছে না!
৬. সন-২০২১: ডক্টর বেশোর নামক যুক্তরাষ্ট্রের একজন বিখ্যাত প্রফেসর বাইবেল নিয়ে গবেষণা করে পৃথিবী ধ্বংসের বিষয়ে তার মতবাদ প্রকাশ করেন। তার মতে ২০২১ সালেই যীশু খ্রিষ্ট পুনরায় পৃথিবীতে আগমন করবেন, এবং ওই সময়ে পৃথিবীতে নেমে আসবে বিভিন্ন প্রলয়ঙ্করী আজাব। যেমন- ভূমিকম্প, জলোচ্ছ্বাস, প্লেগ ইত্যাদি। এবং ওই বছরেই পূর্নরূপে ধ্বংস হবে পৃথিবী।
৭. ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৯: সৌরজগতে উল্কাপাত এমন কোনো আহামরি বিষয় নয়, যদি না সেই উল্কাপিণ্ডের সরাসরি আমাদের পৃথিবীর সাথে সংঘর্ষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা না থাকে। কিন্তু কি হবে, যদি কোনো উল্কা পৃথিবীর খুব কাছে দিয়ে চলে যায়?
এমনটাই হয়ত ঘটতে যাচ্ছে ২০১৯ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি। “NT7” নামক একটা উল্কাপিণ্ড ওইদিন পৃথিবী খুব কাছ দিয়ে ধাবিত হবে। এর ফলে হয়তো ধ্বংস হয়ে যেতে পারে একটা গোটা মহাদেশ। সমগ্র পৃথিবীর আবহাওয়ায় আসতে পারে ব্যাপক পরিবর্তন, যা অবশ্যই আমাদের জন্যে খুব সুখকর হবে না।
So, what do you want to do before the farewell of the earth?