বিদেশি নাগরিক ও পর্যটকদের জন্য দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয়বহুল নগরী কোনটা জানেন? আমাদের এই বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা ! এখানেই বিদেশি নাগরিক ও পর্যটকদের জীবনযাত্রার খরচ সব চাইতে বেশি !
আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান মার্কার তাদের সাম্প্রতিক জরিপে এই তথ্যটি দিয়েছে। প্রতিবছর বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল নগরীগুলোর তালিকা প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি। এবার সেই তালিকায় সারাবিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল নগরী এঙ্গোলার রাজধানী লুয়ান্ডা, আর তার পরে আছে যথাক্রমে হংকং, টোকিও, জুরিখ এবং সিঙ্গাপুর। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এখানে সবার প্রথমেই রয়েছে ঢাকার নাম। পুরো তালিকাটিতে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৮। অথচ প্রতিবেশী দেশ ভারতের সবচেয়ে ব্যয়বহুল নগরী মুম্বাই এর অবস্থান এই তালিকায় ৫৭ তে !
বিদেশীদের জন্য ঢাকা যে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ব্যয়বহুল নগরী, তা কতটা অবাক হওয়ার মত?
সাধারণ নাগরিকের কাছে এটা আপাত বিস্ময়ের একটি ব্যাপার হলেও অর্থনৈতিক কিছু সূচক বিশ্লেষণ করলে এটাকে আসলে খুব একটা অমূলক মনে হবেনা। কিছু নির্দিষ্ট পণ্য বা সেবা, যা একজন বিদেশী নাগরিকের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু, সেগুলোর অভাব বা দুষ্প্রাপ্যতার কারণেই খরচটা বেশি মনে হচ্ছে। যে কারণে ঢাকা তুলনামূলকভাবে অন্য অনেক শহরের চাইতে ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু তাই বলে মুম্বাইয়ের চেয়েও ঢাকা ব্যয়বহুল?
হ্যাঁ। কারণ বাংলাদেশের সীমিত পরিসরের ভিতরে জনসংখ্যা যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং একই সাথে মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই তুলনায় বাসযোগ্য শহর সেভাবে বাড়েনি। এধরণের শহরে যখন সীমিত পরিসরে বিভিন্ন পণ্য বা সেবা দেবার প্রয়োজন পড়ে, তখন স্বাভাবিকভাবেই এগুলোর মূল্যে তার একটা প্রতিক্রিয়া ঘটে।
মুম্বাই এর মত অন্যান্য শহরগুলোতে বিদেশীদের উপস্থিতির সংখ্যা অনেক বেশী হওয়ায় তাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে এসব বিশেষ পণ্যের প্রাপ্যতা এবং মূল্য স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হয়। কিন্তু বাংলাদেশের ঢাকায় এখনো এত বেশী সংখ্যক বিদেশীর উপস্থিতি না থাকায় তাদের চাহিদার বিশেষ বিদেশী পণ্য ও সেবা গুনমান ঠিক রেখে সরবরাহ করতে গেলে দাম অনেক বেড়ে যায়, যার প্রভাব পড়ছে এখানে তাদের জীবনযাত্রার ব্যয়ে।
এ কারণেই বিদেশি নাগরিক ও পর্যটকদের জন্য সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর হিসেবে উঠে এসেছে ঢাকার নাম !